schizophrenia |
সিজোফ্রেনিয়া মূলত একটি মানসিক রোগ
। এই রোগে রোগীর চিন্তাভবনা আর অনুভুতির প্রকাশের মধ্যে অনেক সময়ই
সংগতি থাকেনা । এটি অত্যন্ত ভয়াবহ একটি মনোরোগ।সিজফ্রেনিয়া নামটি এসেছে গ্রিক শব্দ
skhizein যার অর্থ split বা দুইভাগে ভাগ করা ও phren যার
অর্থ mind বা মন থেকে । অনেকেই একে ডিসোসিয়েটিভ
আইডেনটিটি ডিজর্ডার এর সাথে তুলনা করে এক করে ফেলে কিন্তু এই দুটি আলাদা আলাদা
রোগ। যদি সিজোফ্রেনিয়ার লক্ষণ বিচার করে প্রথম থেকেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নেয়া যায়
তবে ভালো ফলাফল পাওয়া সম্ভব। সিজোফ্রেনিয়ার ক্ষেত্রে রোগী সম্পুর্ন একটি কাল্পনিক
জগতের মধ্যে বসবাস করতে থাকে। সে নিজেই একটি ধারনা তৈরি করে নেয় আর সেটাকেই সত্য
মেনে চলতে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ধারনা গুলো হয় নেগেটিভ। যেমন রোগী এমন কিছু
অনুভব করে বিশ্বাস করে যা আসলে বাস্তবে হয়না । কিন্তু সে তার বিশ্বাসে অটল
থাকে।কখনো তার মনে হতে পারে যে কেউ তাকে খুন করতে চাইছে , সবসময় কেউ তার পিছু করছে
, তার পার্টনার তাকে ধোকা দিচ্ছে, তার আশেপাশের সবাই তার বিরুদ্ধে কোন ষড়যন্ত্র
করছে । অথবা যা কিছু তার সামনে ঘটে চলছে সব কিছু তাকে উদ্যেশ্য করেই হচ্ছে।যেমন
টিভি তে কোন টক শো চলছে তার মনে হবে কথা গুলো তাকে নিয়ে বলা হচ্ছে বা সে বাজারে
গেলো সম্পুর্ন অপরিচিত ২ জন লোক নিজেদের মধ্যে কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে রোগীর
মনে হবে সেটাও তাকে উদ্দেশ্য করেই করা হচ্ছে ।
সিজফ্রেনিয়ার সিম্পট্মস
এমন ধারনা যা সত্য নয়
কিন্তু রোগীর কাছে সেটাই অনেক মহত্বপূর্ন। সে যা ভাবে আর বিশ্বাস করে হাজার যুক্তি
দিয়েও তার কাছে সেটাকে সঠিক বলে প্রমাণ করা সম্ভব হয়না ।
মতিভ্রম (Hallucinations)
এমন সব জিনিস দেখা
,শোনা বা অনুভব করা যা সত্যিকার অর্থে আশেপাশে থাকেই না। এমনকি হয়ত সে জিনিসের কোন
অস্তিত্বই নেই।
উদ্ভট চিন্তাভাবনা ও কথাবার্তা
বলা (Disorganized thoughts and speech)
চিন্তা ভাবনা যা
সম্পুর্ন অর্থহীন । অর্থহীন অসংগতিপুর্ন কথাবার্তা বলা। নিজের মনের মত করে উদ্ভট
কথা বানানো অথবা একি কথা বার বার বলা।
এছাড়াও আরো কিছু লক্ষণ
আছে যেমন –
কারো সাথে কথা বলতে
সমস্যা হওয়া।
খুশির কোন কিছুতেও
খুশি হতে না পারা।
নিচের চিন্তাভাবনাকে
বাস্তবে রূপ দিতে না পারা ।
একা একা থাকা ।
সিজোফ্রেনিয়ার কারন
জিনগত
যদি কারো মা বাবা
উভয়ের সিজোফ্রেনিয়া থেকে থাকে তবে ওই ব্যক্তির সিজোফ্রেনিয়াতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ৪০%।আর যদি মা বা
বাবার যেকোন একজনের সিজোফ্রেনিয়া থাকে তবে ওই ব্যক্তির সিজোফ্রেনিয়াতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ১২%। এরকম ক্ষেত্রে দেখা যায় বাচ্চা বয়স থেকেই এদের
মধ্যে কিছু অসংলগ্ন আচরন দেখা যায়। তবে ১৫-২৫ বছরের মধ্যে এই রোগের বহিঃপ্রকাশ
বেশি ঘটে ।
কোন মারাত্মক দুর্ঘটনা
জীবনে কোন বড় ধরনের
মারাত্মক দুর্ঘটনা যেমন খুব কাছের কারো মৃত্যু বা ছেড়ে চলে যাওয়া। আচানক কোন বড় ধরনের
ঝামেলায় পড়া । অনেক বেশি স্ট্রেস ,টাকা পয়সার সমস্যার কারনে অতিরিক্ত দুশচিন্তা ইত্যাদি।
ব্রেইনে ক্যামিক্যাল
ইমব্যালান্স
যাদের সিজোফ্রেনিয়া হয়
তাদের ব্রেইন এ কেমিক্যাল ইমব্যালান্স হয় । বিশেষ করে ডোপামিন ও সেরোটনিন। এই দুই
হরমোন এর লেভেল অনেক বেড়ে যায় সিজোফ্রেনিয়াতে।
সিজোফ্রেনিয়ার চিকিৎসা
সিজোফ্রেনিয়ার চিকিৎসার মেইন জিনিস হলো ওষুধ যাকে বলা হয়
এন্টিসাইকোটিক্স । এই ওষুধ 2 টি কেমিক্যাল এর উপর কাজ করে ডোপামিন ও সেরোটনিন।এন্টিসাইকোটিক্স ব্যবহার করার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মনে রাখা খুবই জরুরি ।
এই ওষুধ এর ফলাফল আসতে অনেক সময় লাগতে পারে।
এই চিকিৎসা অনেক দীর্ঘমেয়াদি হয়।কমপক্ষে এক থেকে দুই বছর পর্যন্ত এই চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হয় ।
এই এন্টিসাইকোটিক্স এর সাইড ইফেক্ট এর সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
2 Comments
Click here for CommentsNice writing mam.
ReplyThanks a lot
ReplyConversionConversion EmoticonEmoticon