বিশ্বের সব থেকে ধনী রহস্যময় হিন্দুধর্মের পদ্মনাভস্বামী মন্দির
ভারতের কেরালা রাজ্যে অবস্থিত পদ্মনাভস্বামী মন্দির পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন ও রহস্যময় মন্দিরগুলোর মধ্যে একটি। কথিত আছে ভগবান বিষ্ণু এখানে অনন্ত শয়নে শায়িত রয়েছেন। এই মন্দিরটি পৃথিবীর সব থেকে ধনী মন্দির। এবং পৌরাণিক এই মন্দিরটি বেশি পরিচিত এর পেছনে লুকিয়ে থাকা রহস্যের জন্যে। আসলে এই মন্দিরে এমন কিছু রহস্য লুকিয়ে আছে যা এই মন্দিরটিকে অন্যান্য মন্দিরগুলো থেকে আলাদা করে থাকে।
২০১১ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এই মন্দিরের দরজাগুলো একের পর এক খোলা হয়। ৫টি দরজা খোলার পর সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটি সদস্যরা মন্দিরের ৬ নম্বর দরজা বা ডোর বি এর কাছে গিয়ে থেমে যান। এরপর থেকেই সারা বিশ্বে কাছে আরো রহস্যময় হয়ে উঠে মন্দিরটি। কি আছে দরজার ওই পাশে আর কেনই বা এই ৬ নম্বর দরজা খোলা গেলো না এমন প্রশ্নই সকলের মনে আসতে থাকে।
প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ মনে করত এই মন্দিরের নিচে গুপ্তধন লুকানো আছে। এই মন্দিরের ভেতর অনেকগুলি গুপ্ত দরজা রয়েছে যেগুলো কখনোই খোলা হয়নি। অনুসন্ধান করার পর জানা যায় এই মন্দিরে মোট ৬টি গুপ্ত দরজা রয়েছে। কিন্তু কেউ জানে না কি রহস্য লুকিয়ে আছে ওই দরজাগুলোর পেছনে।
২০১১ সালের ২৭এ জুন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেএ ই মন্দিরের দরজাগুলো একের পর এক খোলা হয়। কিন্তু কেবলমাত্র ৫টি দরজাই খুলতে সক্ষম হয়েছিল দলটি। আর দরজা খোলার পর যা পাওয়া গেছে তা হতবাক করে দিয়েছিল সবাইকে। প্রায় বাইশ ফুট নিচে এই দরজাগুলোর পেছনে পাওয়া যায় প্রচুর পরিমানে সোনা, হীরের নেকলেস, সোনার তৈরি গহনা, দেব দেবীর মূর্তি যার বর্তমান মূল্য ২২ বিলিয়ন কোটি ডলার বা ১ লাক ৩২ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ মানুষ যা প্রাচীনকাল থেকে শুনে আসছিল তা শুধুমাত্র গল্প ছিল না সত্যিকার অর্থেই লুকায়িত ছিল কোটি কোটি টাকার গুপ্তধন এই মন্দিরে। কিন্তু ৬ নম্বর দরজা ছিল আকর্ষণের মূল কেন্দ্র। অন্যান্য দরজা থেকে রহস্যময় এই দরজায় সাপের মুর্তি খোদাই করা ছিল। আর বলা হয়ে থাকে যে এটি ছিল একটি সতর্কবার্তা। সাপ না নাগরাজ এই দরজাটি পাহারা দিচ্ছে। এই দরজায় কোন হাতল বা তালা কিছুই ছিল না। দরজাটি কিভাবে খোলা যাবে এই বিষয়েও কারো কোন ধারনা ছিল না। বলা হয়ে থাকে এই দরজাটি একমাত্র ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী খোলা সম্ভব। প্রায় ৫০০ বছর আগে দরজাটি বন্ধ করা হয়েছিল নাগবন্ধন মন্ত্রের মাধ্যমে। এই জন্যে এই দরজাটি কেবলমাত্র একজন পবিত্র ও মহান ব্যক্তি মন্ত্র দ্বারা খুলতে পারে। আর এই মন্ত্রটি হলো গারুদা মন্ত্র। আর এটাও মনে করা হয় যে সেই মহান ব্যক্তির জন্ম এখনো হয়নি।
আজ থেকে ১০০ বছরেরও আগে ১৯০৮ সালে এই দরজা প্রথম খোলার চেষ্টা করা হয়। সেই সময় তারা যখন দরজাটি খোলার চেষ্টা করেন প্রচুর পরিমানে সাপ তাদের সামনে বেরিয়া আসে। যার ফলে তারা আর দরজাটি খোলার সাহস করেনি।
এই মন্দিরের সাথে আরেকটি গল্প রয়েছে। বলা হয়ে থাকে প্রায় এক শতাব্দী আগে মারাত্মক দুর্ভিক্ষ হয়েছিল এবং মন্দিরের আধিকারিকরা দরজাটি খোলার চেষ্টা করেছিল কিন্তু তারা ভয়ঙ্কর এক আওয়াজ শুনে থেমে যান। অনেকেই বলে দরজাটি নাকি সুড়ঙ্গপথ হয়ে সমুদ্রের সাথে যুক্ত। আর জোর করে এই রহস্যময় দরজাটি খুলতে গেলে আসতে পারে বিপত্তি। সুনামির মত প্রলয়ের তান্ডবে ধ্বংস হয়ে যাতে পারে জনজীবন।
রহস্যে ভরা পদ্মনাভস্বামী মন্দির দেশি বিদেশি পর্যটকদের অন্যতম আ্কর্ষনের জায়গা। হিন্দু ধর্মের নানা রহস্যময় বস্তুগুলোর মধ্যে এই মন্দিরটি অন্যাতম। কেউই জানেনা সত্যিকার অর্থে কি আছে বন্ধ দরজার ওই পাশে।
ConversionConversion EmoticonEmoticon